বড় ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি হওয়ার প্রবণতাও বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া হচ্ছে জামানত ছাড়া। অনেকেই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হচ্ছেন। একই ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছেন।
সোনালী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স এবং প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স—এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের তথ্য যাচাই করে এ ধরনের অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে সংসদীয় একটি কমিটি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য গত বছরের ৩ জানুয়ারি এই উপকমিটি গঠন করেছিল জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটি। গতকাল সোমবার উপকমিটি মূল কমিটির কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উল্লেখিত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বেশির ভাগ ঋণের অনুকূলে জামানত নেই। ব্যক্তিগত জামিনদারের বিপরীতে এসব ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের খেলাপি হওয়া বেশির ভাগ ঋণও জামানতবিহীন। সোনালী ব্যাংকের অনেক ঋণের বিপরীতেও কোনো জামানত নেই। যেসব ঋণের বিপরীতে জামানত আছে, সেসব জামানত বা সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়াও জটিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ভান্ডার বা সিআইবিতে গ্রাহকের তথ্য হালনাগাদ না থাকায় অনেক গ্রাহককে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।
কমিটি বড় ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত রাখা এবং রক্ষিত জামানতের মান ও বাজারমূল্য সঠিকভাবে নির্ণয় নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাসহ কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা সীমিত করাসহ ১৪ দফা সুপারিশ করেছে।
এই তদন্ত কমিটির সভাপতি ছিলেন অনুমিত হিসাব কমিটির সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি বলেন, পাঁচটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করেছি। এ কারণে একটু বেশি সময় লেগেছে তদন্তে। গতকাল সংসদীয় কমিটিতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তবে এ প্রতিবেদন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। মূল কমিটিতে আলোচনার পর কমিটির সুপারিশগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হবে।