ভোর পাঁচটায় সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পশ্চিম–দক্ষিণ দিকের এক কোনায় আগুন পোহাচ্ছিলেন সুরুজ মিয়া (৫৫)। সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জনের একটা দল।
আজ শনিবার বেলা দুইটা থেকে এই মাঠেই বিএনপির সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হবে। সুরুজ মিয়ার কাছে প্রশ্ন ছিল, এই শীতে এত কষ্ট করে কেন এলেন। উষ্ণ গলায় জবাব এল, ‘দুই টার্ম ধইরা ভুট দিতাম পারছি না। মনের মইধ্যে বহুত কষ্ট। ভুটের অধিকার ফিরা পাইতাম চাইতাছি। তাই বিএনপির ডাকে ছুইটা আইছি।’
সুরুজ মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামে। বললেন, সুনামগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেলে করে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটে পৌঁছান। তিনি বিএনপিকে সমর্থন করেন।
সুরুজ মিয়া পেশায় কৃষক। তিনি যখন কথা বলছিলেন, আগুন পোহানোর জটলায় থাকা অন্যরাও বলেন, ‘চাচা হাছা (সত্য) কথাই কইছইন।’
ভোরে হালকা কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত। মাঠে জড়সড় হয়ে অনেকে কম্বল গায়ে ঘুমিয়ে আছেন। কেউবা গল্প করছেন। জটলা বেঁধে অনেকে আবার আগুন জ্বালিয়ে শীত কাটানোর চেষ্টা করছেন।
সুরুজ মিয়ার সঙ্গে তাঁর নিজ উপজেলা তাহিরপুর ছাড়াও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা এবং সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কয়েকজন আগুন পোহাচ্ছিলেন। তাঁদের অনেকেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী নেতা। কেউ কেউ বিএনপির সমর্থক।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাধাবিপত্তি পেরিয়ে অনেক কষ্টে তাঁরা গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট শহরে পৌঁছেছেন। পরে পুরো রাত সমাবেশস্থলেই নির্ঘুম কাটিয়েছেন।